Search This Blog

Monday, 17 September 2018

পুরোনো কবিতা

পুরোনো কবিতা

বিশ্বজিৎ সরকার


আজ তার চোখ আর খোঁজে না আমায়,
লাল রঙ লেগে আছে এখনও জামায়।
অনেক পুরোনো থাম
তাতে লেখা তার নাম
বন্ধ চিঠির খাম
খোলা জানালায় -
হয়তো সে দেখেও, দেখেনা আমায় !

তোমার মুখের ছাপ, আরশিতে লেগে,
তাই দেখে দিন কাটে, বহু রাত জেগে।
ক্যানভাসে ছিল আঁকা
সযত্নে তুলে রাখা
পুরোটাই আজ ফাঁকা
নিদারুন বেগে -
তোমার প্রাণের ছোঁয়া, মোর প্রানে লেগে।

ঘাস বনে আজও কত পাতা ঝরে যায়,
পুরাতন ঢেউ গুলো মিছে পিছু ধায়।
কার যেন ডাক শুনি
আকাশের তারা গুনি
জানি তুমি নও খুনি
এই সন্ধ্যায় -
কত গান, কত প্রাণ, রোজ ফিরে যায়।

পুরোনো গোলাপ কুঁড়ি, শুকনো তা অতি,
নাম নেই, ধাম নেই, নেই কোনো গতি।
কাঁটা গুলো তবু ফোটে
আমারই কপালে জোটে
রক্তের ধারা ছোটে
তুমি মধুমতি -
ফেলে দিতে নাহি পারি, পুরোনো যা অতি।

দূর থেকে গান গায়, ঐ এক অন্ধ,
পাই না যে দেখিতে, চোখ দুটি বন্ধ।
তোমার ঐ হাতখানি
আমার শিয়রে আনি
সযত্নে কাছে টানি
কাটে ধন্ধ -
আতরের আড়ালে এক, পচা-গলা গন্ধ।

Sunday, 16 September 2018

তোমার কথা

তোমার কথা

বিশ্বজিৎ সরকার


তুমি মেঘের রানী
ইচ্ছে হলেই
বৃষ্টি নামাও রোজ,
আমি তৃষ্ণ চাতক
হাজার খুঁজেও
পাইনা জলের খোঁজ।

তুমি দোলের দিনে
রঙ লাগালে
রাঙা আবির হাতে,
আমি ব্যর্থ প্রেমিক
ঘুম আসেনা
নিকষ কালো রাতে।

তুমি প্রজাপতির
ডানায় আঁকা
রঙিন আলপনা,
আমি এক অল্প কবির
গল্প কথার
অলীক কল্পনা।

তুমি পাহাড় চূড়ায়
প্রভাত আলোর
সপ্তরঙের খেলা,
আমি দিনের শেষে
ক্লান্ত পায়ে
পথ হারিয়ে ফেলা।

তুমি পূর্ণিমা চাঁদ
হাত বাড়িয়ে
সাধ্য কি যে ধরি!
আমি গভীর স্রোতে
হারিয়ে যাওয়া
ডুবন্ত এক তরী।


Friday, 14 September 2018

বিদায়

বিদায়

বিশ্বজিৎ সরকার


ক্ষনিক বাদেই সব-ই অতীত আবার,
হারিয়ে যাওয়া, হাজার স্মৃতির ভিড়ে।
ওপার থেকে ভেসে আসে ডাক যাবার,
মুহূর্তরা চতুর্দিকে ঘিরে।
উপচে পরে সকাল থেকে রাত,
জ্যোৎস্না-ভোরের আকাশ হারায় নীল।
কেউ ছুঁড়ে দেয় দু-এক মুঠো ভাত
খুঁজে বেড়াই, ঠোঁটের পাশের তিল।

ক্ষনিক বাদেই সবই অতীত আবার,
যাবেই মুছে, চিহ্ন থেকে চিহ্ন।
আমিও শিকার ভীষণ হিংস্র থাবার,
তোমার আমার সবার স্পর্শ ভিন্ন।
আকাশ যখন হঠৎ মেঘে ঢাকে,
যখন, অসময়ে খুব বৃষ্টি নামে ।
আর শোনা যায়, দূর থেকে কেউ ডাকে,
রাস্তা হারাই ডাইনে নাকি বামে ।

ক্ষনিক বাদেই সব-ই অতীত আবার
রহস্যেরা ঘনিয়ে এল বুঝি।
আর কিছু নেই কোথাও ফিরে পাবার,
সবটা জেনেও তবুও মিছেই খুঁজি।
দিনের শেষে সূর্য্য যেমন লাল,
শেষের বেলায় আমায় রাঙিয়ে নাও।
ঐ যে জাহাজ তুলে দিয়েছে পাল,
আর দেরি নয়, বন্ধু বিদায় দাও।

Friday, 7 September 2018

দেবী বন্দনা

দেবী বন্দনা

বিশ্বজিৎ সরকার


মা আসছেন ঘোড়ার পিঠে
যাবেন চেপে দোলায়,
ব্যোমভোলানাথ হেঁটেই বেড়ান
সর্পমালা গলায়।
বাহন বলতে একখানি তার
আছে বটে ষন্ড;
তাকে নিয়ে চলাই যে দায় 
সবই হবে পন্ড।
সে মানেনা কোনো নিয়ম
সে মানে না আইন,
ধরলে পুলিশ গুনতে হবে
হাজার টাকা ফাইন।
তাই তো মা সদাই আসেন
একলা বাপের বাড়ি;
এসব দেখে মহাদেবের
মুখ খানা ঠিক হাঁড়ি।

মায়ের কোলে চেপে আসেন 
গনেশ সিদ্ধিদাতা,
সঙ্গে আছেন সরস্বতী
হাতে কলম-খাতা।
প্যাঁচার সাথে মা লক্ষী
সঙ্গে ধানের ভান্ড,
ময়ূর চেপে কার্তিক আসেন
এলাহী সব কান্ড।
মায়ের বাহন সিংহ মশাই
দেখতে ভয়ঙ্কর,
রেগে গেলেই ঘনঘন
নাড়তে থাকেন কেশর।
আরো আছেন বৌ-টি কলা
লম্বা ঘোমটা টেনে,
গনেশ বাবা ভীষন খুশি
তাকেও সঙ্গে এনে।

বাপের বাড়ি মহাভোজ
বিরাট আয়োজন,
মন্ডা মিঠাই লুচি পায়েস
সবই প্রয়োজন।
শিব ঠাকুর লুকিয়ে দেখে 
মা-কে প্রশ্ন করে;
কি কি পেলে, কি কি খেলে
গিয়ে বাপের ঘরে ?
কি আর পাব ! কি-ই বা খাব !
সেসব দিন আর কই ?
এই যে দেখ ভোগ দিয়েছে
চাট্টি ঢ্যাঁপের খই।
মা আর কথা না বাড়িয়ে
নিজের কাজে যান,
মহাদেব আর কি-ই বা করেন
গাঁজায় লম্বা টান।

নতুন নতুন জামা জুতো
কত ঠাকুর দেখা,
সবাই মিলে ঘুরতে যাওয়া
ভাল্লাগে না একা।
চারটে দিন দারুন মজা
খাবার রকমারি,
চলেই যাবে ভেবেই কেমন
মনটা লাগে ভারী।
আশিষ দিও মাগো যেন
সুখ শান্তি আসে,
তোমার সকল সন্তানেরা
সবাই যাতে হাসে।
এবার বুঝি সময় হল
সত্যি তোমার যাবার,
মাগো তুমি এস কিন্তু
আসছে বছর আবার।